স্বর্গ মরীচিকা ৬

সূর্য তখন পশ্চিমে ঢলে পড়েছে, পাহাড়ের ঐ জায়গাটার ছায়া ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে পড়ছে। ভিক্টর অনেকক্ষণ অ্যানার দিকে তাকিয়ে থাকলো, তারপর পিছনে ফিরে গলি পথের দিকে হাঁটতে আরম্ভ করলো। গলি পথটার কাছে এসে ও কয়েক মুহুর্ত থামলো, তারপর আবার ঐ দেয়ালের দিকে ফিরে তাকালো। অ্যানা যেখানটায় দাঁড়িয়েছিল, সেখানে আর কেউ নেই। আর কোন প্রাণী নেই, কোন প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা গেল না। আর কিছুই নেই। সরু জানালার ফাটলগুলো আর দেয়াল – তখনও অন্ধকার নেমে আসেনি – তাই আলোর উজ্জ্বল মন্টে ভেরিটার জোড়া শিখের ছাড়া আর কোন কিছুই চোখে পড়লো না ওর।

ভিক্টর যে কয়দিন নার্সিং হোমে ছিল আমি প্রতিদিন ওর কাছে যেতাম, বেশ কিছু সময় ওর সঙ্গে সময় কাটাতাম। ও ধীরে ধীরে সুস’ হয়ে উঠতে থাকলো, মনের জোরও বাড়তে থাকলো ওর। আমি ডাক্তারের সাথে, নার্সদের সাথে ওর বিষয় নিয়ে কথা বললাম। ওরা বললেন, ভিক্টর মানসিকভাবে যথেষ্ট সুস’। আমি আসার আগে স্নায়বিক দুর্বলতা আর মানসিক আঘাতে ওর যে বিপর্যস- অবস’া ছিল, তা থেকে ও সম্পূুর্ণ সুস’ হয়ে উঠেছে। আমার নিয়মিত উপসি’তি দ্রুত সুস’ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ওরা ভিক্টরকে ছেড়ে দিলো। আমি ওকে আমার বাড়িতে নিয়ে এলাম।

সে বছরের হেমনে-র দীর্ঘ শীতল সন্ধ্যগুলোতে আমি আর ভিক্টর আবার মন্টে ভেরিটার ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ও আর অ্যানার একান- বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করলাম। অ্যানার আচার-ব্যবহার কিংবা কথাবার্তা, কোন কিছুতে কোন অসঙ্গতি ছিল না বলে ভিক্টর বারবার মত প্রকাশ করলো। ওদের বিয়ের পরের সময়টা ছিল অত্যন- স্বাভাবিক আর আনন্দময় ছিল। অ্যানা যে বৈভব আর আড়ম্বর অপছন্দ করতো সেটা ভিক্টরের কাছে কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হলেও অদ্ভুত কিংবা সৃষ্টিছাড়া মনে হয়নি। আমি ওকে সেই রাতের ঘটনাটার কথা বললাম, যে রাতে আমি অ্যানাকে খালি পায়ে বরফঢাকা বাগানে হাঁটতে দেখেছিলাম। ভিক্টরও স্বীকার করলো, এমন কাজ অ্যানা প্রায়ই করতো। ওর ব্যবহার আর আচরণে কিছুটা খুঁতখুঁতে ভাব ছিল, যা ওর ভালই লাগতো। আর এসব নিয়ে ও খুব বেশী উৎসাহ দেখাতে পছন্দ করতো না।

আমি অ্যানার বিয়ের আগের সময়ের কথা জানতে চাইলাম। ভিক্টর বলেছিল, ‘অ্যানার শিশু বা কিশোরী বয়সে তেমন কোন অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেনি। অল্প বয়সে ওর বাবা-মা মারা যান, ও বড়ই হয়েছে ওর ফুফুর কাছে। ছেলেবেলায় কোন ভয়াবহ কিংবা আজগুবি ঘটনা ঘটেনি – মাঝরাতে ভুতের ভয় পাওয়া, অন্ধকার ঘরে কিম্বা স্বপ্নে ও কোন স্কন্ধকাটা দেখেনি। ওর বড় হয়ে ওঠার দিনগুলো ছিল অত্যন- সহজ, সরল আর স্বাভাবিক। অ্যানার অতীত ঘেঁটে কোন লাভ নেই।

ভিক্টর আরও বলেছিল, ‘অ্যানার কোন অস্বাভাবিক আচরণ নেই। অ্যানা অত্যন- স্বাভাবিক, একেবারে পৃথক, একেবারেই স্বতন্ত্র। একটা অতি সাধারণ পরিবারের একটা সন-ান হঠাৎ করে যেমন করে বিখ্যাত গায়ক সুরকার, কবি কিংবা কোন মহাপুরুষ হয়ে যায়, আনা তেমন একটা কিছু। এসব ঘটনা কোন সাধারণ হিসাবের মধ্যে আনা যায় না। এরা হঠাৎ করেই পৃথিবীতে জন্ম নেয়। আমার অশেষ সৌভাগ্য ওর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। ঠিক একইভাবে আমার চরম দুর্ভাগ্য ও আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেল। আমি ওকে ধরে রাখতে পারলাম না। সে যাই হোক, ও যেভাবে বলেছিল আমি আমার জীবন সেভাবেই কাটিয়ে দেব। তবে প্রত্যেক বৎসর একবার করে মন্টে ভেরিটায় যাবো।’

ভিক্টরের জীবনের এই করুণ ভাঙন আমাকে অভিভূত করে দিলো। আমার মনে হলো এমন ঘটনা যদি আমার জীবনে দেখা দিতো, হয়তো আমি এই বেদনা সহ্য করতে পারতাম না। একটা অজানা অপরিচিত সমপ্র্রদায় কিভাবে একজন বুদ্ধিমতী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মেয়েকে চিন-াশক্তিকে অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই এত গভীরভাবে প্রভাবিত করে ফেললো ভাবতেই শিউরে উঠলাম। একজন অশিক্ষিত নির্বোধ গ্রাম্য মেয়েকে আর তার আত্মীয় স্বজনদের বিভ্রান- করে ফেলতে পারে, কারণ ওরা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন আর এই প্রভাবমুক্ত হওয়ার মতো মানসিক শক্তি ওদের ছিল না।

ভিক্টরকে আমি সে কথা বললাম। আমি ওকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে ওদেশের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে দেশব্যাপী তদন- পরিচালনা করা সম্ভব হবে, একাজে সাংবাদিকদের সম্পৃক্ত করে বিষয়টার গভীরে দেখা যেতে পারে। আমি ভিক্টরকে বললাম, এ কাজ আমি করবো। আমরা এখন বিশ শতকে বাস করছি, মধ্যযুগের প্রতিবন্ধকতা এখন আর নেই। আমি বিষয়টা নিয়ে আন-র্জাতিকভাবে নাড়াচড়া করতে চাই। সে রকম কাজ করার ক্ষমতা আর যোগ্যতা আমার আছে।

ভিক্টর শান-ভাবে আমার সব কথা শুনে বললো, ‘কিন’ কেন? এতো সব করে কি লাভ?’

আমি বললাম, ‘অ্যানাকে ফিরিয়ে আনা যাবে, অন্যদেরও মুক্ত করা যাবে। শত শত পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।’

ভিক্টর একইভাবে বললো, ‘আমরা কি কখনও আশ্রম বা আখড়াগুলো ভেঙে ফেলি, না বন্ধ করছি? সারা পৃথিবী জুড়ে ওগুলো টিকে আছে। শত শত আছে, আরও নতুন করে গড়ে উঠছে।’

আমি স্বীকার করলাম, ‘হ্যাঁ আছে, হচ্ছেও, কিন’ সে সব ব্যাপার তো আলাদা। শত শত বৎসর ধরে ওগুলো আছে, ওদের নিয়ম কানুন আমরা জানি বুঝি, ওদেরকে জানি, চিনি।

ভিক্টর অনিশ্চিতের কন্ঠে বললো, ‘হয়তো, মন্টে ভেরিটার ওরাও তেমনই একটা সমপ্রদায়। কিভাবে ওরা জীবনযাপন করে, কি খায়, অসুস’ হয়ে পড়লে কি করে, মৃত্যুর সময় কি হয়? জানি না, জানতেও চাই না। আমি একটা বিশ্বাসই হৃদয়ে লালন করতে চাই অ্যানা বলেছে ও যা খুঁজছিল, তা ও পেয়েছে, আর ও সুখে আছে। আমি ওর সেই সুখ নষ্ট করে দিতে চাই না।’

ও আমার মুখের দিকে তাকালো, ওর দৃষ্টি কেমন বিভ্রান-, অথচ বুদ্ধিতে উজ্জ্বল। একটুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো, ‘সত্যিই আশ্চর্য লাগছে তুমি এসব কথা বলছো। আমার তো মনে হয়, তুমি অ্যানার অনুভূতি সম্পর্কে আমার চেয়ে বেশী বুঝতে পারবে। পর্বতের আবেগ তোমাকেই বেশী অভিভুত করতো। আমার মনে আছে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে তুমি উদাত্ত কন্ঠে আবৃত্তি করতে,

পৃথিবীর সাথে খুব বেশী জড়িয়ে পড়েছি আমি,

আয় আর ব্যয়ের আবর্তে পড়ে অন-রের শক্তি করছি ক্ষয়।

আমি ধীরে ধীরে উঠে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম; বাইরের প্রকৃতি কুয়াশাচ্ছন্ন, একটু দূরে আবছাভাবে নদীটা দেখা যাচ্ছে। আমি কোন কথা বললাম না, ভিক্টরের কথা আমাকে খুবই নাড়া দিলো। আমি কোন কথা খুঁজে পেলাম না। আমি বুঝতে পারলাম, কেন মন্টে ভেরিটার ঘটনা আমার মনে ঘৃণার সৃষ্টি করছে, কেন আমি ঐ জায়গাটা ধবংশ করে ফেলতে চাচ্ছি। এ সবই অ্যানার জন্য। অ্যানা এত অল্প সময়ের মধ্যে সত্যের সন্ধান পেয়ে গেল, অথচ আমি এখনও সেই অন্ধকারে ডুবে আছি।

ভিক্টরের সাথে আমার এই বাক্যালাপ আমাদের দু’জনের মধ্যে কোন বিভেদ বা বন্ধুত্বের ফাটল সৃষ্টি না হলেও একটা মাত্রার সংযোজন হলো; আমাদের ঘনিষ্টতা এক ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে আরম্ভ করলো। এতদিনে আমরা আমাদের জীবনের অর্ধেক আয়ু পার করে ফেলেছি।

ভিক্টর ওর জমিদারীতে ফিরে গেল। কয়েকদিন পর চিঠি লিখে জানালো, ও ওর সমস- সম্পত্তি আর ব্যবসায় ওর এক ভাগিনাকে দান করে দিচ্ছে, যে এখনও তার স্কুল জীবন পার করেনি। ওকে ও নিজের কাছে এনে রাখছে, যাতে সে সব কিছু বুঝে নিতে পারে। ছেলেটি সবকিছুতে অভ্যস’ হয়ে পড়লে, ও নিজে কি করবে তা এখন ঠিক করেনি। ভিক্টর ওর ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা আমাকে বিস-ারিত জানালো না। আমিও আমার ব্যবসায়িক কাছে ব্যাতিব্যস- হয়ে পড়লাম, বেশীর ভাগ সময় আমাকে আমেরিকাতে থাকতে হলো। এর কিছুদিন পরই সারা পৃথিবীর উপর ভয়াবহ দুর্বিপাকে নেমে এলো। পরের বছরই ১৯১৪ সাল।

যুদ্ধের একেবারে শুরুতেই ভিক্টর সেনাবাহিনীতে নাম লিখিয়ে যুদ্ধে যোগ দিলো। মনে হয়, এভাবেই ও ওর সমস- প্রশ্ন আর অসি’রতার উত্তর খুঁজে দেখতে পেয়েছিল। ও সম্ভবত ভেবেছিল এই যুদ্ধেই ও শেষ হয়ে যাবে। যুদ্ধে যোগ দিতে আমার কিছুটা দেরী হলো, আমার আমেরিকার কাজ গুছিয়ে নেবার জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন ছিল। যুদ্ধ কখনও আমার পছন্দের বিষয় হয়ে ওঠেনি। তাই যুদ্ধে অংশ নিতে আমার কিছুটা দেরী হলো। যুদ্ধ চালাকালীন দীর্ঘ সময়ে ভিক্টরের কাছ থেকে কোন খবর আমি পেলাম না। আমরা দুজনে পৃথিবীর সম্পূর্ণ দুই ভিন্ন প্রানে- যুদ্ধে জড়িয়ে গিয়েছিলাম, ছুটির সংক্ষিপ্ত সময়েও আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হয়নি । দীর্ঘ চার বছরের মধ্যে ও মাত্র একটা চিঠি লিখেছিল। ও লিখেছিলঃ

নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমি প্রত্যেক বছর মন্টে ভেরিটাতে গিয়েছি। সেই বৃদ্ধের বাড়িতে রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে মন্টে ভেরিটার চূঁড়োয় গিয়ে উঠতাম। সবকিছু ঠিক আগের মতোই থাকতো. শান-, শব্দহীন, মৃত। অ্যানার জন্য দেয়ালের নিচে একটা চিঠি রেখে ঐ দেয়াল আর জানালার দিকে তাকিয়ে সারা দিনটা পার করে দিতাম। মনে হতো ও যেন আমার কাছেই আছে। যদিও জানতাম ও আর আমার সাথে দেখা করবে না। পরদিন আবার উপরে উঠতাম। সেদিন দেয়ালের কাছে গিয়ে দেখতাম অ্যানা আমার চিঠির উত্তর দিয়েছে। অবশ্য সেটাকে ঠিক চিঠি বলা যাবে না।

একখন্ড মসৃণ পাথরে খোদাই করে লেখা হয়েছে কয়েকটা শব্দ। আমার মনে হলো এটাই ওদের যোগাযোগের একমাত্র পদ্ধতি। ও লিখেতো, ও ভালো আছে, সুস’ আছে আর খুব আনন্দে আছে। ও তোমাকে শুভেচ্ছা জানাতে বলতো। ওকে নিয়ে কোন দুশ্চিন-া করতে মানা করতো। ব্যাস এইটুকুই। নার্সিং হোমে আমি যেমন বলেছিলাম, মৃত ব্যক্তিরা যেভাবে আত্নার মাধ্যমে কথা বলে, যেন ঠিক তেমন একটা বিষয়। এই নিয়েই আমাকে সন’ষ্ট থাকতে হবে। আমি এই নিয়েই সন’ষ্ট থাকতে চেষ্টা করছি। যুদ্ধ থেকে যদি বেঁচে ফিরে আসি, তাহলে ওখানে চলে যাবো, ঐ পাহাড়ের কাছেই থাকবো, চোখের দেখা না হলেও প্রত্যেক বৎসর পাথরে খোদাই করা একটা চিঠি তো পাবো। এটাই হবে আমার সবচেয়ে বড়ো সান-না।

ভালো থাকো বন্ধু, যেখানেই থাকো না কেন।

ভিক্টর।

যুদ্ধ শেষ হতে আমি সেনাবহিনীর দায়িত্ব থেকে অব্যহতি পেয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস- হওয়ার প্রস’তি নিতে থাকলাম। বাড়ী ফিরে প্রথম যে কাজটি করলাম তা হলো ভিক্টরকে চিঠি লেখা। উত্তর পেতেও দেরী হলো না, ভিক্টরের ভাগিনা অত্যন- বিনয়ের সাথে লিখে জানালো, ভিক্টরের সমস- বিষয়-সম্পত্তি দেখার দায়িত্ব এখন ওর উপর পড়েছে। যুদ্ধে ভিক্টর আহত হয়েছিল, অবশ্য আঘাত খুব বেশী ছিল না। বর্তমানে ও ইংল্যান্ডে বসবাস করছে না, ইউরোপের কোথাও সে আছে, স্পেনে না ইতালীতে সঠিকভাবে তার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে সে নিশ্চিত যে ভিক্টর আর কোন দিন তার এই জমিদারীতে ফিরবে না, বিদেশেই বাকী জীবনটা কাটিয়ে দেবে বলে জানিয়ে গেছেন। ও যদি ভিক্টরের কোন সংবাদ পায়, তবে অবশ্যই আমাকে জানাবে।

আর কোন সংবাদ এলো না। আর যুদ্ধপরবর্তী লন্ডনের মানুষ পরিবেশ আমার কাছে খুবই অসহ্য মনে হচ্ছিল। তাই এখানকার সমস- সম্পর্ক চুকিয়ে আমেরিকায় চলে গেলাম। এরপর বিশ বছর ভিক্টরের সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি।

আমাদের দু’জনের আবার দেখা হওয়ার বিষয়টা যে কোন দৈব ঘটনা নয়, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। এ সকল ঘটনা আগে থেকেই ভাগ্যে লেখা হয়ে থাকে। এ বাবদে আমার নিজের মত হলো আমাদের জীবন এক প্যাকেট তাসের মতো, যাদের সাথে আমরা পরিচিতি হই এবং মাঝে মাঝে ভালবাসি আর পছন্দ করি তারা সব সময়েই আমাদের ধারে কাছে থাকে। ভ্যাগ্যের হাতে কাছাকাছি, পাশাপাশি বন্দি হয়ে থাকি। যখন খেলা শেষ হয়ে যায় আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাই নানা দিকে, তারপর আবার এক জায়গায় জড়ো হই অমোঘ নিয়মে।

কোন ঘটনার পরম্পরায় আমি বায়ান্নো বছর বয়সে, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দুই তিন বছর আগে, ইউরোপে গিয়ে হাজির হলাম সেটা এ গল্পের উপজীব্য নয়। আসল ঘটনা হলো, যাই হোক না কেন আমাকে ইউরোপে আসতে হলো।

Leave a Reply